পলিমার : পলিমার (Polimer) শব্দটি এসেছে দুটি গ্রিক শব্দ পলি (Poly) ও মেরোস (Merus) থেকে, যার অর্থ হলো অনেক (গধহু) ও অংশ (চধৎঃ)। অর্থাৎ অনেকগুলো একই রকম ছোট ছোট অংশ একের পর এক জোড়া লেগে যে একটি বড় জিনিস উৎপন্ন হয় তাকে পলিমার বলে।
মনোমার : যে ছোট অণু থেকে পলিমার তৈরি হয়, তাদেরকে বলে মনোমার। যেমন : পলিথিন ব্যাগ ইথিলিন নামক ছোট ছোট মনোমার থেকে তৈরি হয় ।
প্রাকৃতিক পলিমার : যে সকল পলিমার প্রকৃতিতে পাওয়া যায়, তাদেরকে প্রাকৃতিক পলিমার বলে। যেমন : পাট, সিল্ক, রাবার ইত্যাদি।
কৃত্রিম পলিমার : যে সকল পলিমার প্রকৃতিতে পাওয়া যায় না, শিল্প কারখানায় কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয়, তাদেরকে কৃত্রিম পলিমার বলে। যেমন : মেলামাইন, রেজিন, বাকেলাইট ইত্যাদি।
পলিমারকরণ প্রক্রিয়া : যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অসংখ্য মনোমারকে সংযুক্ত করে পলিমার তৈরি করা হয়, তাকে বলে পলিমারকরণ প্রক্রিয়া। সাধারণত পলিমারকরণে উচ্চ চাপ ও তাপের প্রয়োজন হয়।
পলিথিন প্রস্তুতি : ইথিলিন গ্যাসকে ১০০০-১২০০ বায়ুমণ্ডলীয় চাপে ২০০ সেলসিয়াস তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করলে পলিথিন পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে পলিমারকরণ দ্রæত করার জন্য প্রভাবক হিসেবে অক্সিজেন গ্যাস ব্যবহার করা হয়।
হ(ঈঐ২ = ঈঐ২)(ইথিলিন) (উচ্চ তাপ ও চাপ)ঙ২ প্রভাবক ( ঈঐ২ ঈঐ২ )হ(পলিথিন)
তন্তু : বস্ত্র শিল্পে বুনন ও বয়নের কাজে ব্যবহৃত প্রাকৃতিক ও কৃত্রিম আঁশ জাতীয় পদার্থকে তন্তু বলে।
সুতা : সব বস্ত্র তৈরি হয় সুতা থেকে। প্রাকৃতিক ও কৃত্রিম আঁশ জাতীয় পদার্থ অর্থাৎ তন্তু থেকে সুতা তৈরি করা হয়।
তন্তুর প্রকারভেদ : উৎস অনুযায়ী তন্তু দুই রকমের। যথা : প্রাকৃতিক তন্তু ও কৃত্রিম তন্তু। প্রাকৃতিক তন্তুসমূহকে তাদের উৎপত্তি অনুযায়ী তিন ভাগে ভাগ করা হয়। যথা : উদ্ভিজ তন্তু, প্রাণিজ তন্তু ও খনিজ তন্তু। আর কৃত্রিম তন্তুসমূহ আবার দুই রকমের। যথা : সেলুলোজিক ও নন-সেলুলোজিক তন্তু।
প্রাকৃতিক তন্তু : যেসব তন্তু প্রকৃতি থেকে পাওয়া যায়, তাদের প্রাকৃতিক তন্তু বলে। যেমন : তুলা, পাট, রেশম, পশম, উল, সিল্ক, ধাতব তন্তু ইত্যাদি। এগুলোর মধ্যে তুলা, পাট ইত্যাদি উদ্ভিদ থেকে পাওয়া যায় বলে এগুলো উদ্ভিজ তন্তু। রেশম, পশম, উল ইত্যাদি প্রাণী থেকে পাওয়া বলে এগুলো প্রাণিজ তন্তু। আবার ধাতব তন্তু প্রাকৃতিক খনিতে পাওয়া যায় বলে এগুলো খনিজ তন্তু।
কৃত্রিম তন্তু : রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় কৃত্রিম উপায়ে যেসব তন্তু প্রস্তুত হয় সেগুলোকে কৃত্রিম তন্তু বলে। যেমন : রেয়ন, পলিস্টার, ডেক্রন, নাইলন ইত্যাদি। এগুলোর মধ্যে রেয়ন (এসিটেট রেয়ন, ভিসকোস রেয়ন, কিউপ্রা অ্যামোনিয়াম রেয়ন) উদ্ভিজ্জ সেলুলোজ থেকে কৃত্রিম উপায়ে নানাভাবে প্রক্রিয়াজাত করে তৈরি হয় বলে এগুলো সেলুলোজিক তন্তু। আর পলিস্টার, ডেক্রন, নাইলন ইত্যাদি সেলুলোজ থেকে তৈরি না করে অন্য পদার্থের মধ্যে রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটিয়ে তৈরি করা হয় বলে এগুলো নন-সেলুলোজিক তন্তু।
জিনিং : বীজ থেকে তুলা আলাদা করার প্রক্রিয়াকে জিনিং বলে। জিনিং প্রক্রিয়ায় প্রাপ্ত তন্তুকে কটন লিন্ট বলে।
স্পিনিং : স্পিনিং বলতে বুঝায় তন্তুসমূহের কয়েকটি সুতাকে একত্রিতভাবে আটকিয়ে যে পাক বা মোচড় দিতে হয়। পাক দেওয়ার জন্য তন্তুসমূহকে পাশাপাশি সমান্তরালভাবে স্থাপন করে এক মাথা স্থির রেখে অন্য মাথা মুড়িয়ে দিতে হয়।
বেøন্ডিং এবং মিক্সিং : সুতা উৎপাদনে বেøন্ডিং-এর উদ্দেশ্য হলো আকাক্সিক্ষত ও উঁচু মানের শক্তিশালী সুতা তৈরি করা। মিক্সিং প্রক্রিয়ায় যেসব তন্তুর দৈর্ঘ্য, সূ²তা, পরিপক্বতা ইত্যাদি গুণগত দিক থেকে প্রায় একই রকম তাদের মিশ্রণকে বুঝায়।
কার্ডিং এবং কম্বিং : কার্ডিং করে তন্তুসমূহের জালাকৃতির গঠন দূর করা হয়। কম্বিং প্রক্রিয়ায় আঁচড়িয়ে তন্তুসমূহের সম্পূর্ণ ময়লা দূর করা হয়।
হেলকিং : লিনেন তন্তুর জন্য বিশেষ ধরনের কম্বিং করা হয়, যা হেলকিং নামে পরিচিত।
¯øাইভার : কার্ডিং এবং কম্বিং করার পর তন্তুসমূহ একটি পাতলা আস্তরের মতো হয় এবং এটিকে ¯øাইভার বলা হয়।
রোডিং : ¯øাইভারকে টেনে সরু করার প্রক্রিয়াকে রোডিং বলা হয়।
টুইস্টিং : ¯øাইভারকে মোচড় বা পাক দেওয়ার প্রক্রিয়াকে টুইস্টিং বলে।
থার্মোপ্লাস্টিকস : যেসব প্লাস্টিকে যতবারই তাপ দেওয়া হলে নরম হয় এবং ঠাণ্ডা করলে শক্ত হয়, তাদের থার্মোপ্লাস্টিকস বলে। পলিথিন, পিভিসি পাইপ, পলিস্টার কাপড় এসব দ্রব্য থার্মোপ্লাস্টিকস ধরনের।
থার্মোসেটিং প্লাস্টিকস : যেসব প্লাস্টিকসে তাপ দিলে নরম না হয়ে পুড়ে শক্ত হয়ে যায় তাদের থার্মোসেটিং প্লাস্টিকস বলে। মেলামাইন, বাকেলাইট ইত্যাদি দ্রব্য থার্মোসেটিং ধরনের প্লাস্টিকস।
Comments