Skip to main content
Hello everybody! সবাই কেমন আছো।

ভূগোল সাজেশন এস এস সি ২০২৫ (জ্ঞান ও অনুধাবনমূলক প্রশ্ন)

ভূগোল সাজেশন

৪র্থ অধ্যায় 

৪র্থ  অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সংক্ষেপে জেনে রাখি

ভ‚ত্বক : ভ‚পৃষ্ঠে যে শিলার কঠিন বহিরাবরণ দেখা যায় তাই ভ‚ত্বক। ভ‚ত্বক অশ্বমণ্ডলের উপরিভাগ। ভ‚ত্বকের পুরুত্ব গড়ে ২০ কিলোমিটার। ভ‚ত্বক বিভিন্ন প্রকার শিলা ও খনিজ উপাদানে গঠিত। 

অশ্মমণ্ডল : সাধারণভাবে ভ‚পৃষ্ঠের উপরিভাগ থেকে ভ‚অভ্যন্তরের দিকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত লঘু ধাতুর সংমিশ্রণে গঠিত মণ্ডলটিকে অশ্মমণ্ডল বলে। 

গুরুমণ্ডল : অশ্মমণ্ডলের নিচে প্রায় ২,৮৮৫ কিলোমিটার পর্যন্ত মূলত ব্যাসল্ট শিলা দিয়ে গঠিত পুরুমণ্ডলকে গুরুমণ্ডল বলে।

কেন্দ্রমণ্ডল : গুরুমণ্ডলের নিচ থেকে পৃথিবীর কেন্দ্র পর্যন্ত মণ্ডলটিকে কেন্দ্রমণ্ডল বলে। এ স্তর প্রায় ৩,৪৮৬ কিলোমিটার পুরু।  

শিলা : ভ‚ত্বক নানা জাতীয় পদার্থ দ্বারা গঠিত। এদের মধ্যে পাথর, নুড়ি, কাঁকর, বালি, কাদা প্রধান। ভ‚ত্বক যেসব উপাদান দ্বারা গঠিত তাদের সাধারণ নাম শিলা।

খনিজ : কতকগুলো মৌলিক উপাদান প্রাকৃতিক উপায়ে মিলিত হয়ে যে যৌগ গঠন করে তাই খনিজ। খনিজ হলো প্রাকৃতিক অজৈব পদার্থ, যার সুনির্দিষ্ট রাসায়নিক গঠন এবং ভৌত ও রাসায়নিক ধর্ম রয়েছে।

আগ্নেয় শিলা : পৃথিবীর আদিম অবস্থা থেকে যে শিলা শীতল ও ঘনীভ‚ত হয়ে কঠিন আকার ধারণ করেছে তাদের আগ্নেয় শিলা বলে। যেমন : গ্রানাইট, ব্যাসল্ট ইত্যাদি।

পাললিক শিলা : পলি সঞ্চিত হয়ে যে শিলা গঠিত হয় তাকে পাললিক শিলা বলে। এ শিলায় পলি সাধারণত স্তরে স্তরে সঞ্চিত হয়। বেলেপাথর, কয়লা, চুনাপাথর, কাদাপাথর, কেওলিন পাললিক শিলার উদাহরণ।

রূপান্তরিত শিলা : আগ্নেয় ও পাললিক শিলা যখন প্রচণ্ড চাপ, উত্তাপ এবং রাসায়নিক ক্রিয়ার ফলে রূপ পরিবর্তন করে নতুন রূপ ধারণ করে তাকে রূপান্তরিত শিলা বলে।

ভ‚পৃষ্ঠের পরিবর্তন : ভ‚পৃষ্ঠ বিভিন্ন  শিলা দ্বারা গঠিত, যা পরিবর্তনশীল। ভ‚গর্ভ যতই ঠাণ্ডা হচ্ছে সেখানকার পদার্থের আয়তন ততই হ্রাস পাচ্ছে। এর ফলে ভ‚গর্ভে সবসময় একটা আলোড়ন চলছে। এই আলোড়নের ফলে সবসময় ভ‚পৃষ্ঠের পরিবর্তন হচ্ছে।

ভ‚মিকম্প : প্রাকৃতিক কারণবশত পৃথিবীর কঠিন ভ‚ত্বকের কোনো কোনো অংশ সময়ে সময়ে ক্ষণিকের জন্য কেঁপে ওঠে। এই কম্পনকে ভ‚মিকম্প বলে।

আগ্নেয়গিরি : ভ‚পৃষ্ঠের দুর্বল ফাটল বা সুড়ঙ্গ দিয়ে ভ‚গর্ভস্থ ধূম, গ্যাস, লাভা, ধূলি, ভস্ম, উত্তপ্ত পাথর খণ্ড, কাদা এবং বিবিধ তরল বা কঠিন ধাতব পদার্থ নির্গত হয়ে ফাটল বা ছিদ্র মুখের চারদিকে জমাট বেঁধে উঁচু মোচাকৃতি যে পর্বতের সৃষ্টি করে  তাকে আগ্নেয়গিরি বলে।

সুনামি : ‘সুনামি’ জাপানি শব্দ, যার অর্থ ‘পোতাশ্রয়ের ঢেউ’। কখনো কখনো সমুদ্রতলে ভ‚মিকম্প অনুভ‚ত হলে সমুদ্রের উপরের পানিতলে প্রচণ্ড ঢেউয়ের সৃষ্টি হয়। এই প্রচণ্ড ঢেউগুলো উপক‚লে পৌঁছে ব্যাপক জানমালের ক্ষতিসাধন করে। এই জাতীয় সামুদ্রিক ঢেউকে সুনামি বলে।

বিচ‚র্ণীভবন ও ক্ষয়ীভবন : শিলারাশির চ‚র্ণবিচ‚র্ণ ও বিশ্লিষ্ট হওয়ার প্রক্রিয়াকে বিচ‚র্ণীভবন বলে। সাধারণত প্রাকৃতিক কারণে শিলা চ‚র্ণবিচ‚র্ণ হয়, অপসারিত হয় না। বায়ুপ্রবাহ, নদীস্রোত ও হিমবাহ দ্বারা চ‚র্ণবিচ‚র্ণ শিলা অন্য স্থানে বাহিত হয়। এ প্রণালিকে ক্ষয়ীভবন বলে।

নগ্নীভবন : বিচ‚র্ণীভবনের সময় শিলা চ‚র্ণবিচ‚র্ণ হয়। পরে ক্ষয়ীভবন দ্বারা ঐ শিলা অপসারিত হলে নিচে অবিকৃত শিলাগুলো নগ্ন হয়ে পড়ে। এরূপ কার্যকে নগ্নীভবন বলে।

অবক্ষেপণ : বায়ুপ্রবাহ, নদীস্রোত, হিমবাহ প্রভৃতি শক্তির প্রভাবে নানা স্থান থেকে ক্ষয়প্রাপ্ত শিলাগুলো যে প্রক্রিয়ায় কোনো এক স্থানে এসে জমা হয়ে নতুন ভ‚মিরূপের সৃষ্টি করে তাকে অবক্ষেপণ বা সঞ্চয় বলে।

নদী : উঁচু পর্বত, মালভ‚মি বা উঁচু কোনো স্থান থেকে বৃষ্টি, প্রস্রবণ, হিমবাহ বা বরফ গলা পানির ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র স্রোতধারার মিলিত প্রবাহ যখন মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে নির্দিষ্ট খাতে প্রবাহিত হয়ে সমভ‚মি বা নিম্নভ‚মির উপর দিয়ে কোনো বিশাল জলাশায় বা হ্রদ অথবা সমুদ্রের সঙ্গে মিলিত হয়, তাকে নদী বলে।

দোয়াব : প্রবহমান দুটি নদীর মধ্যবর্তী ভ‚মিকে দোয়াব বলে।

নদীসঙ্গম : দুই বা ততোধিক নদীর মিলনস্থলকে নদীসঙ্গম বলে।

উপনদী : পর্বত বা হ্রদ থেকে যেসব ছোট নদী উৎপন্ন হয়ে কোনো বড় নদীতে পতিত হয় তাকে সেই বড় নদীর উপনদী বলে। বাংলাদেশের তিস্তা ও করতোয়া হলো যমুনা নদীর উপনদী।

শাখানদী : মূল নদী থেকে যেসব নদী বের হয় তাকে শাখানদী বলে। বাংলাদেশের কুমার ও গড়াই হলো পদ্মা নদীর শাখানদী।

নদী উপত্যকা : যে খাতের মধ্য দিয়ে নদী প্রবাহিত হয় সে খাতকে উক্ত নদীর উপত্যকা বলে।

নদীগর্ভ : নদী উপত্যকার তলদেশকে নদীগর্ভ বলে।

নদী অববাহিকা : উৎপত্তি স্থান থেকে শাখাপ্রশাখার মাধ্যমে যে বিস্তীর্ণ অঞ্চল দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়ে সমুদ্র বা হ্রদে পতিত হয় সেই সমগ্র অঞ্চলই নদীর অববাহিকা। 

পর্বত : ভ‚পৃষ্ঠের অতিউচ্চ, সুবিস্তৃত এবং খাড়া ঢালবিশিষ্ট শিলাস্তূপকে পর্বত বলে। উৎপত্তিগত বৈশিষ্ট্য ও গঠনপ্রকৃতির ভিত্তিতে পর্বত প্রধানত চার প্রকার। যথা : ১. ভঙ্গিল পর্বত; ২. আগ্নেয় পর্বত; ৩. চ্যুতি-স্ত‚প পর্বত ও ৪. ল্যাকোলিথ পর্বত।  

মালভ‚মি : পর্বত থেকে নিচু কিন্তু সমভ‚মি থেকে উঁচু খাড়া ঢালযুক্ত ঢেউ খেলানো বিস্তীর্ণ সমতল ভ‚মিকে মালভ‚মি বলে। অবস্থানের ভিত্তিতে মালভ‚মি তিন ধরনের। যথা : ১. পর্বতমধ্যবর্তী মালভ‚মি; ২. পাদদেশীয় মালভ‚মি এবং ৩. মহাদেশীয় মালভ‚মি।

সমভ‚মি : সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে অল্প উঁচু মৃদু ঢালবিশিষ্ট সুবিস্তৃত ভ‚মিকে সমভ‚মি বলে। উৎপত্তির ধরনের ভিত্তিতে সমভ‚মিকে প্রধানত দুইভাগে ভাগ করা যায়। যথা : ক্ষয়জাত সমভ‚মি ও সঞ্চয়জাত সমভ‚মি।

¡ সৃষ্টির সময় পৃথিবী ছিল- উত্তপ্ত গ্যাসপিণ্ড।

¡ পৃথিবীর ভারী উপাদানগুলো- কেন্দ্রের দিকে জমা হয়।

¡ পৃথিবীর হালকা উপাদানগুলো ভরের তারতম্য অনুসারে নিচের থেকে উপরের স্তরে জমা হয়।

¡ অশ্মমণ্ডলের উপরের অংশ হলো- ভ‚ত্বক।

¡ ভ‚গর্ভের তিনটি স্তর হলো - অশ্মমণ্ডল, গুরুমণ্ডল ও কেন্দ্রমণ্ডল।

¡ ভ‚ত্বকের পুরুত্ব প্রায় ২০ কিলোমিটার।

¡ গুরুমণ্ডল মূলত- ব্যাস শিলায় গঠিত-

¡ সমুদ্র তলদেশে ভ‚ত্বকের গভীরতা প্রায়- ৫ কিলোমিটার।

¡ মহাদেশীয় ভ‚ত্বকের স্তরকে সিয়াল বলে, যা গঠিত- সিলিকন ও অ্যালুমিনিয়াম দিয়ে।

¡ কেন্দ্রমন্ডলের প্রধান উপাদান হলো- নিকেল ও লোহা।

ভ‚ত্বক গঠিত- শিলা দ্বারা।

¡ গঠনপ্রণালি অনুসারে শিলা তিন প্রকার যথা- আগ্নেয়শিলা, পাললিকশিলা, রূপান্তরিত শিলা।

¡ আগ্নেয়শিলার অপর নাম- অস্তরীভ‚ত শিলা, যাতে কোনো স্তর নেই।

¡ আগ্নেয়শিলা দ্ইু ভাগে বিভক্ত যথা- বহি:জ আগ্নেয় শিলা ও অন্তঃজ আগ্নেয়শিলা।

¡ পাললিক শিলা ভ‚পৃষ্ঠের মোট আয়তনের শতকরা - ৫ ভাগ।

¡ পাললিক শিলা গঠিত হয়- জৈবিক ও রাসায়নিক প্রক্রিয়ায়।

¡ পাললিক শিলা দেখা যায়- উদ্ভিদ ও জীবজন্তুর জীবাশ্মে।

¡ রূপান্তরিতি শিলা হলো- প্রচণ্ড চাপ, উত্তাপ ও রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে আগ্নেয় ও পাললিক শিলার রূপান্তরিত রূপ।

¡ চুনাপাথর, বেলেপাথর রূপান্তরিত হয়ে যথাক্রমে- মার্বেল কোয়ার্টজাইটে পরিণত হয়।

¡ রূপান্তরিত শিলায় জীবাশ্ম দেখা যায় না।

ভ‚প্রক্রিয়া হলো- প্রাকৃতিকভাবে ভ‚মিরূপের সাধিত পরিবর্তন।
¡ ভ‚পৃষ্ঠের ধীর পরিবর্তন ২টি প্রকৃয়ার সম্পন্ন হয় যথা- নগ্নীভবন ও অবক্ষেপণ।
¡ ভ‚পৃষ্ঠের বেশির ভাগ পরিবর্তন হয়ে থাকে- ভ‚আলোড়নের মাধ্যমে
¡ ভ‚মিকম্প হলো- ভ‚ত্বকের তাপে বিকিরণের ফলে ভ‚ত্বক সংকুচিত হয়ে ফাটল ও ভাঁজ সৃষ্টির ফলাফল।
¡ সাধারণত কয়েক সেকেন্ড স্থায়ী হয় ভ‚কম্পন।
¡ পামীর মালভ‚মিতে বিশাল ভ‚পাত হওয়ার ফলে তুরস্কে  ভ‚মিকম্প হয়েছিল-১৯১১ সালে।
¡ সাধারণত কয়েক সেকেন্ড স্থায়ী হয় ভ‚কম্পন।
¡ ১৭৮৭ সালে আসামে ভূমিকম্পের ফলে- ব্রহ্মপুত্র নদ তার গতিপথ পরিবর্তন করে যমুনা নদী দিয়ে প্রবাহিত হয়।
¡ সুনামি একটি জাপানি শব্দ যার অর্থ হলো- পোতাশ্রয়ের ঢেউ।
¡ ২০০৪ সালে ভারত মহাসাগরে সুনামি ফলে ১৪টি দেশে মারাত্মক দুর্যোগ তৈরি হয়।

ভ‚পৃষ্ঠের ফাটলের পর পাশের ক্রমশ জমাট বেঁধে যে উঁচু মোচাকৃতি পর্বত সৃষ্টি করে তাকে বলে- আগ্নেয়গিরি।

¡ আগ্নেগিরির মুখ দিয়ে গঠিত পদার্থকে বলে- লাভা।

¡ অভ্যন্তরের চাপ বৃদ্ধি পেয়ে অগ্ন্যুৎপাত ঘটায়।

¡ ভ‚আন্দোলনের ফ-েল অগ্ন্যুৎপাত হয়।

¡ অগ্ন্যুৎপাতের ভিত্তিতে আগ্নেয়গিরিকে ভাগ করা যায়-৩ ভাগে।

¡ জাপানের ফুজিয়ামা আগ্নেয়গিরি হলো- সুপ্ত আগ্নেয়গিরি।

¡ আকার ও আকৃতির উপর ভিত্তি করে আগ্নেয়গিরিকে ভাগ করা যায়- ৩ ভাগে।

¡ আগ্নেয়গিরি থেকে নির্গত পদার্থ চারিদিকে সঞ্চিত হয়ে- মালভ‚মির সৃষ্টি হয়।

¡ ১৮৮৩ সালে অগ্ন্যুৎপাতের ফলে বিরাট গহŸর দেখা যায়- সুমাত্রা ও জাভা দ্বীপের মধ্যবর্তী অংশে।

¡ আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমাংশে অধিক পরিমাণে খনিজ দ্রব্য পাওয়া যায়- অগ্ন্যুৎপাতের জন্য।

¡ আকস্মিক পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট ৩টি ভ‚মিরূপ- পর্বত, মালভ‚মি ও সমভ‚মি।
¡ ভ‚মিরূপের ধীর পরিবর্তন হচ্ছে- বিচ‚ণীভবন ও ক্ষয়ীভবন, অপসারণ, নগ্নীভবন এবং অবক্ষেপন।
¡ শিলা ক্ষয়সাধন হয়- বায়ুপ্রবাহ, নদীস্রোত, ও হিমবাহ দ্বারা।
¡ বিচ‚র্ণীভবন ও ক্ষয়ীভবন হলো- শিলারাশির চূর্ণ বিচ‚র্ণ হওয়া।
¡ ক্ষয়ীভবনের মাধ্যমে ধীর পরিবর্তন হয়- বায়ু, বৃষ্টিপাত, নদী, হিমবাহ প্রভ‚তি দ্বারা।
¡ বায়ুর ক্ষয়কার্য অধিক দেখা যায়- মরুভ‚মিতে।
¡ শিলা সহজেই বাহিত হয়ে ধীর পরিবর্তনের মাধ্যমে ক্ষয়সাধন হয়- বায়ুপ্রবাহের আঘাতে।
¡ হিমবাহের ফলে- পর্বতগাত্রের ভিতর পানি প্রবেশ করে বরফে পরিণত হয়।
¡ বৃষ্টির পানি প্রবাহিত হওয়ার সময়- শিলাকে আংশিকভাবে ক্ষয় ও আলগা করে।
¡ নদীর স্রোতের বেগ বেশি থাকে- পার্বত্য অবস্থায়।
নদী যখন কোনো হ্রদ বা সাগরে এসে পতিত হয় তখন সেই পতিত স্থানকে মোহনা এবং নদীর অধিক বিস্তৃত মোহনাকে- খাঁড়ি বলে।
¡ দোয়াব হলো- প্রবাহমান দুটি নদীর মধ্যবর্তী ভ‚মি।
¡ নদীসংগম হলো- দুই বা ততোধিক নদীর মিলনস্থল।
¡ পর্বত বা হ্রদ থেকে সৃষ্ট ছোট নদী যদি বড় নদীতে পতিত হয় তাকে বড় নদীর- উপনদী বলে।
¡ গর্ভনদী হলো- মূল নদী উপত্যকার তলদেশ।
¡ নদীর গতিপথ হলো- উর্ধ্বগতি, মধ্যগতি, নিম্নগতি।
ঊর্ধ্বগতিতে নদীর প্রধান কাজ হলো - ক্ষয়সাধন।
¡ মধ্যগতি অবস্থায়- নদীর সঞ্চয় কাজ শুরু হয়।
¡ নিম্নগতিতে- স্রোতের বেগ কমে যায়।
ভ‚মির আকৃতি ও গঠনগত বৈশিষ্ট্যকে বলে- ভ‚মিরূপ।
¡ ভৌগোলিক দিক দিয়ে পৃথিবীর ভ‚মিরূপ হলো- পর্বত, মালভ‚মি ও সমভ‚মি।
¡ পর্বত হলো- সমুদ্রতল থেকে অন্তত ১,০০০ মিটারের বেশি উঁচু সুবিস্তৃত ও খাড়া ঢালবিশিষ্ট শিলাস্তূপ।
¡ ঊর্ধ্ব ও অধঃভাঁজ সংবলিত ভ‚মিরূপই হলো - ভঙ্গিল পর্বত।
¡ আগ্নেয় পর্বত হলো- ইতালির ভিসুভিয়াস, জাপানের ফুজিয়ামা।
¡ ভ‚আলোড়নের সময় সৃষ্ট পর্বত হলো- ভারতের বিন্ধ্যা ও সাতপুরা, পাকিস্তানের লবণ পর্বত ইত্যাদি।
¡ ল্যাকোলিথ পর্বতের - কোনো শৃঙ্গ থাকে না।
¡ মালভ‚মি হলো- পর্বত থেকে নিচু কিন্তু সমভ‚মি থেকে উঁচু খাড়া ঢালযুক্ত বিস্তৃত সমভ‚মি।
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর 
প্রশ্ন \ ১ \ ভ‚ত্বকের বাহ্যিক অবয়বে কী দেখা যায়?
উত্তর : ভ‚ত্বকে পৃথিবীর বাহ্যিক অবয়ব যেমন : সমভ‚মি, মালভ‚মি, পাহাড়, পর্বত, নদী, হ্রদ, সাগর, মহাসাগর ইত্যাদি দেখা যায়।
প্রশ্ন \ ২ \ কেন্দ্রমণ্ডল কী কী উপাদান দ্বারা গঠিত?
উত্তর : কেন্দ্রমণ্ডল লোহা, নিকেল, পারদ, সিসা ইত্যাদি উপাদান দ্বারা গঠিত।
প্রশ্ন \ ৩ \ ঊর্ধ্বগুরুমণ্ডল কী খনিজ দ্বারা গঠিত?
উত্তর : ঊর্ধ্বগুরুমণ্ডল প্রধানত লোহা ও ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ সিলিকেট খনিজ দ্বারা গঠিত।
প্রশ্ন \ ৪ \ শিলা কী?
উত্তর : ভ‚ত্বক যেসব উপাদান দ্বারা গঠিত তাদের শিলা বলে।
প্রশ্ন \ ৫ \ একটি মৌলিক উপাদানে গঠিত এমন একটি খনিজের নাম লেখ?
উত্তর : একটি মৌলিক উপাদানে গঠিত এমন একটি খনিজের নাম হীরা।
প্রশ্ন \ ৬ \ চুনাপাথর কোন খনিজ থেকে সৃষ্ট?
উত্তর : চুনাপাথর ক্যালসাইট নামের খনিজ থেকে সৃষ্ট।
প্রশ্ন \ ৭ \ বহিঃজ আগ্নেয় শিলা কী করে সৃষ্টি হয়?
উত্তর : ভ‚গর্ভের উত্তপ্ত তরল পদার্থ ম্যাগমা আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত বা অন্য কোনো কারণে বেরিয়ে এসে শীতল হয়ে জমাট বেঁধে বহিঃজ আগ্নেয় শিলার সৃষ্টি হয়।
প্রশ্ন \ ৮ \ অন্তঃজ আগ্নেয় শিলার উদাহরণ দাও।
উত্তর : অন্তঃজ আগ্নেয় শিলার উদাহরণ গ্রানাইট, গ্যাব্রো, ডলোরাইট।
প্রশ্ন \ ৯ \ পাললিক শিলা কী প্রক্রিয়ায় গঠিত হয়?
উত্তর : পাললিক শিলা যৌগিক, জৈবনিক বা রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় গঠিত হয়।
প্রশ্ন \ ১০ \ কাদা ও শেল রূপান্তরিত হয়ে কিসে পরিণত হয়?
উত্তর : কাদা ও শেল রূপান্তরিত হয়ে ¯েøটে পরিণত হয়।
প্রশ্ন \ ১১ \ কোন শিলায় ছিদ্র দেখা যায়?
উত্তর : পাললিক শিলায় ছিদ্র দেখা যায় ।
প্রশ্ন \ ১২ \ ভ‚পৃষ্ঠের আকস্মিক পরিবর্তন কী?
উত্তর : ভ‚পৃৃষ্ঠে হঠাৎ করে অল্প সময়ে এবং অল্প স্থানে যে পরিবর্তন সাধিত হয় তাকে আকস্মিক পরিবর্তন বলে। 
প্রশ্ন \ ১৩ \ ভ‚পৃষ্ঠের আকস্মিক পরিবর্তন কী দ্বারা সংঘটিত হয়?
উত্তর : ভ‚পৃষ্ঠের আকস্মিক পরিবর্তন সংঘটিত হয় প্রধানত ভ‚মিকম্প, সুনামি ও আগ্নেয়গিরি দ্বারা।
প্রশ্ন \ ১৪ \ ভ‚মিকম্প কাকে বলে?
উত্তর : পৃথিবীর কঠিন ভ‚ত্বকের কোনো কোনো অংশ প্রাকৃতিক কোনো কারণে কখনো কখনো অল্প সময়ের জন্য হঠাৎ কেঁপে ওঠে। ভ‚ত্বকের এরূপ আকস্মিক কম্পনকে ভ‚মিকম্প বলে।
প্রশ্ন \ ১৫ \ ‘সুনামি’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর : ‘সুনামি’ জাপানি শব্দ। এর অর্থ হলো ‘পোতাশ্রয়ের ঢেউ’।
প্রশ্ন \ ১৬ \ আগ্নেয়গিরি কী?
উত্তর : ভ‚পৃষ্ঠের দুর্বল অংশের ফাটল দিয়ে ভ‚গর্ভের গলিত পদার্থ প্রবলবেগে ঊর্ধ্বে উৎক্ষিপ্ত হয়ে ক্রমশ জমাট বেঁধে যে উঁচু মোচাকৃতি পর্বত সৃষ্টি করে তাকে আগ্নেয়গিরি বলে।
প্রশ্ন \ ১৭ \ ভিসুভিয়াস কী?
উত্তর : ভিসুভিয়াস ইতালির একটি আগ্নেয় পর্বত।
প্রশ্ন \ ১৮ \ সক্রিয় আগ্নেয়গিরি কাকে বলে?
উত্তর : যেসব আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত এখনও বন্ধ হয়নি তাদের সক্রিয় আগ্নেয়গিরি বলে।
প্রশ্ন \ ১৯ \ ইতালির ভিসুভিয়াস আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতে কোন দুটি নগর ধ্বংস হয়ে যায়?
উত্তর : ইতালির ভিসুভিয়াস আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতে হারকিউলেনিয়াম ও পাম্পই নগর ধ্বংস হয়ে যায়।
প্রশ্ন \ ২০ \ বিচ‚র্ণীভবন কী?
উত্তর : শিলারাশির চ‚র্ণবিচ‚র্ণ ও বিশ্লিষ্ট হওয়ার প্রক্রিয়াকে বিচ‚র্ণীভবন বলে।
প্রশ্ন \ ২১ \ চ্যুতি কী?
উত্তর : ভ‚আলোড়নের সময় ভ‚পৃষ্ঠের শিলাস্তরে প্রসারণ এবং সংকোচনে ভ‚ত্বকে ফাটলের সৃষ্টি হয়। এ ফাটল বরাবর ভ‚ত্বকের স্থানচ্যুত হওয়াকে চ্যুতি বলে।
প্রশ্ন \ ২২ \ নদীর উৎস কাকে বলে?
উত্তর : যেখান থেকে নদীর উৎপত্তি হয় তাকে নদীর উৎস বলে।
প্রশ্ন \ ২৩ \ নদীর মোহনা কাকে বলে?
উত্তর : নদী যখন কোনো হ্রদ বা সাগরে এসে পতিত হয়, তখন সেই পতিত স্থানকে মোহনা বলে। 
প্রশ্ন \ ২৪ \ নদীর খাড়ি কাকে বলে?
উত্তর : নদীর অধিক বিস্তৃত মোহনাকে খাড়ি বলে। 
প্রশ্ন \ ২৫ \ দোয়াব কাকে বলে?
উত্তর : প্রবহমান দুটি নদীর মধ্যবর্তী ভ‚মিকে দোয়াব বলে।
প্রশ্ন \ ২৬ \ নদী সঙ্গম কাকে বলে?
উত্তর : দুই বা ততোধিক নদীর মিলনস্থলকে নদী সঙ্গম বলে।
প্রশ্ন \ ২৭ \ উপনদী কাকে বলে?
উত্তর : পর্বত বা হ্রদ হতে যেসব ছোট নদী উৎপন্ন হয়ে কোনো বড় নদীতে পতিত হয় তাকে সেই বড় নদীর উপনদী বলে। বাংলাদেশের তিস্তা ও করতোয়া হলো যমুনা নদীর উপনদী।
প্রশ্ন \ ২৮ \ শাখা নদী কাকে বলে? 
উত্তর : মূল নদী থেকে যেসব নদী বের হয় তাকে শাখা নদী বলে। বাংলাদেশের কুমার ও গড়াই হলো পদ্মা নদীর শাখা নদী।
প্রশ্ন \ ২৯ \ নদী উপত্যকা কাকে বলে?
উত্তর : যে খাতের মধ্য দিয়ে নদী প্রবাহিত হয় সে খাতকে উক্ত নদীর উপত্যকা বলে।
প্রশ্ন \ ৩০ \ নদীগর্ভ কাকে বলে?
উত্তর : নদীর উপত্যকার তলদেশকে নদীগর্ভ বলে।
প্রশ্ন \ ৩১ \ ভৌগোলিক বিচারে সমগ্র পৃথিবীর ভ‚মিরূপকে কী কী ভাগে ভাগ করা হয়েছে?
উত্তর : ভৌগোলিক বিচারে পৃথিবীর সমগ্র ভ‚মিরূপকে ১. পর্বত ২. মালভ‚মি ৩. সমভ‚মি এ তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
প্রশ্ন \ ৩২ \ কী কী কারণে পর্বত গঠিত হয়?
উত্তর : ভ‚আলোড়ন, আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত, ভ‚ত্বকের ক্ষয়কার্য ও সঞ্চয়কার্য এসব কারণে পর্বত গঠিত হয়।
প্রশ্ন \ ৩৩ \ ঊর্ধ্বগতিতে নদীর প্রধান কাজ কী?
উত্তর : ঊর্ধ্বগতিতে নদীর প্রধান কাজ হলো ক্ষয়সাধন।
প্রশ্ন \ ৩৪ \ ঊর্ধ্বগতিতে নদীর কী কী ক্ষয়জাত ভ‚মিরূপ পাওয়া যায়?
উত্তর : নদীর ঊর্ধ্বগতি অবস্থায় ‘ভি’ আকৃতির উপত্যকা, গিরিখাত ও ক্যানিয়ন, জলপ্রপাত ইত্যাদি ক্ষয়জাত ভ‚মিরূপ পাওয়া যায়।
প্রশ্ন \ ৩৫ \ গ্যান্ড ক্যানিয়ন কী?
উত্তর : গ্যান্ড ক্যানিয়ন হলো উত্তর আমেরিকার কলোরাডো নদীর বিখ্যাত গিরিখাত।
প্রশ্ন \ ৩৬ \ পর্বত কাকে বলে?
উত্তর : সমুদ্রতল থেকে অন্তত ১০০০ মিটারের অধিক উঁচু সুবিস্তৃত ও খাড়া ঢালবিশিষ্ট শিলাস্তূপকে পর্বত বলে।
প্রশ্ন \ ৩৭ \ পাহাড় কাকে বলে?
উত্তর : সাধারণত ৬০০ থেকে ১০০০ মিটার উঁচু স্বল্প বিস্তৃত শিলাস্তূপকে পাহাড় বলে।
 অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর 
প্রশ্ন \ ১ \ শিলা ও খনিজ কী ? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : ভ‚ত্বক শিলা দ্বারা গঠিত। শিলা গঠিত হয় বিভিন্ন খনিজের সংমিশ্রণে। কতকগুলো মৌলিক উপাদান প্রাকৃতিক উপায়ে মিলিত হয়ে যে যৌগ গঠন করে তাই খনিজ। খনিজ হলো একটি প্রাকৃতিক অজৈব, পদার্থ যার সুনির্দিষ্ট রাসায়নিক গঠন এবং ভৌত ও রাসায়নিক ধর্ম রয়েছে। খনিজ দুই বা ততোধিক মৌলের সমন্বয়ে গঠিত হলেও কিছু কিছু খনিজ একটি মাত্র মৌল দ্বারা গঠিত হতে পারে। যেমন, হীরা, সোনা, তামা, পারদ ও গন্ধক। শিলা গঠনকারী প্রতিটি খনিজের আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য বজায় থাকে। যদিও বেশিরভাগ শিলাই একাধিক খনিজ দ্বারা গঠিত হয়। সেক্ষেত্রে খনিজ এবং শিলা একই পদার্থ।
প্রশ্ন \ ২ \ ব্যাসল্ট ও গ্রানাইট শিলা কীভাবে সৃষ্টি হয়? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : ভ‚পৃষ্ঠের আকস্মিক পরিবর্তন তথা আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত বা ভ‚মিকম্পের ফলে অনেক সময় ভ‚ত্বকের দুর্বল অংশে ফাটলের সৃষ্টি হয়। তখন পৃথিবীর অভ্যন্তর থেকে উত্তপ্ত গলিত লাভা নির্গত হয়ে আগ্নেয় শিলার সৃষ্টি হয়। ব্যাসল্ট ও গ্রানাইট শিলা এভাবে সৃষ্টি হয়।
প্রশ্ন \ ৩ \ কয়লা ও খনিজ তেলকে জৈব শিলা বলা হয় কেন?
উত্তর : পাললিক শিলা যৌগিক, জৈবনিক বা রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় গঠিত হতে পারে। বেলে পাথর, কয়লা, শেল, চুনাপাথর ইত্যাদি পাললিক শিলার উদাহরণ। জীবদেহ থেকে উৎপন্ন হয় বলে কয়লা ও খনিজ তেলকে জৈব শিলাও বলা হয়।
প্রশ্ন \ ৪ \ আগ্নেয়শিলার দুটি বৈশিষ্ট্য লিখ।
উত্তর : আগ্নেয়শিলার দুটি বৈশিষ্ট্য হলো :
১. আগ্নেয় শিলা কেলাসিত হয়। এর স্ফটিকগুলোর গঠন পরস্পরের সাথে সংযোজিত। ফলে এটি খুব শক্ত ও ভারী হয়। 
২. এ শিলায় কোনো জীবাশ্ম থাকে না। কারণ উত্তপ্ত গলিত পদার্থ হতে এ শিলার উৎপত্তি হয় বলে এর মধ্যে জীবজন্তু ও বৃক্ষ লতার অস্তিত্ব থাকতে পারে না।
প্রশ্ন \ ৫ \ পাললিক শিলার দুটি বৈশিষ্ট্য লিখ।
উত্তর : পাললিক শিলার দুটি বৈশিষ্ট্য হলো :
১. পাললিক শিলায় স্তর দেখা যায়। কারণ এ শিলা পলল বা তলানিরূপে স্তরে স্তরে  সঞ্চিত হয়। 
২. এ শিলায় জীবাশ্ম দেখা যায়। কারণ এ শিলা পললরূপে সঞ্চিত হবার সময় এর মধ্যে নানাবিধ সামুদ্রিক জীবজন্তুর কঙ্কাল ও উদ্ভিদের দেহাবশেষ প্রস্তরীভ‚ত অবস্থায় থাকে। 
প্রশ্ন \ ৬ \ রূপান্তরিত শিলার দুটি বৈশিষ্ট্য লিখ।
উত্তর : রূপান্তরিত শিলার দুটি বৈশিষ্ট্য হলো :
১. রূপান্তরিত শিলা কেলাসিত বা স্ফটিকাকার।
২. এ শিলায় খনিজ দ্রব্যগুলো সমান্তরাল থাকে।
প্রশ্ন \ ৭ \ ভ‚পৃষ্ঠের পরিবর্তন বলতে কী বোঝ?
উত্তর : ভ‚পৃষ্ঠ সর্বদা পরিবর্তিত হচ্ছে, কখনো ধীরে, কখনো আকস্মিকভাবে। ভ‚ত্ত¡বিদদের মতে বর্তমানে পৃথিবী যে অবস্থায় আছে কোটি কোটি বছর আগে এ অবস্থায় ছিল না। পৃথিবী সৃষ্টির পর ভ‚পৃষ্ঠের অনেক রদবদল হয়েছে। পাহাড়-পর্বত নিমজ্জিত হয়েছে সমুদ্রগর্ভে, সমুদ্রগর্ভ উত্থিত হয়ে সৃষ্টি হয়েছে সুউচ্চ পর্বতশ্রেণি। পর্বত ও মালভ‚মি পরিণত হয়েছে সমভ‚মিতে। ভ‚পৃষ্ঠের পরিবর্তন প্রক্রিয়া দুইটি। যথা : আকস্মিক পরিবর্তন ও ধীর পরিবর্তন। 
প্রশ্ন \ ৮ \ ভ‚পৃষ্ঠের বেশিরভাগ পরিবর্তন কীভাবে ঘটে?
উত্তর : পৃথিবীর অভ্যন্তর ভাগ এখনও উত্তপ্ত ও গলিত অবস্থায় রয়েছে। এসব উত্তপ্ত বস্তুর মধ্যে তাপ ও চাপের পার্থক্য হলে ভ‚ত্বকে যে আলোড়ন ঘটে তাকে ভ‚আলোড়ন বলে। এ ভ‚আলোড়নের ফলেই ভ‚পৃষ্ঠের বেশিরভাগ পরিবর্তন হয়ে থাকে।
প্রশ্ন \ ৯ \ আগ্নেয়গিরির কুফল কী হতে পারে ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ফলে লাভা চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ে গ্রাম, নগর, কৃষিক্ষেত্র সব ধ্বংস করে। ১৮৭৯ সালে ইতালির ভিসুভিয়াস আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ফলে হারকিউলোনিয়াম ও পাম্পেই নামের দুটি নগর উত্তপ্ত লাভা ও ভস্মরাশির মধ্যে ডুবে গিয়েছিল।
প্রশ্ন \ ১০ \ নদীর সঞ্চয়কার্য বলতে কী বোঝ লেখ।
উত্তর : নদীর গতির সব পর্যায়ে কম বেশি সঞ্চয়কার্য দেখা গেলেও নদীর জীবনচক্রের শেষ পর্যায়ে নদীর সঞ্চয়কার্য বেশি হয়। সমুদ্রের নিকটবর্তী অঞ্চল হলো নদীর শেষ অবস্থা এবং এ পর্যায়ে নদীর নিম্নগতি থাকে। এতে নদী উপত্যকা সর্বাপেক্ষা অধিক প্রশস্ত হয় এবং গভীরতা একেবারে কমে আসে। ফলে নদীবাহিত শিলাচ‚র্ণ, পলিমাটি, সূ² বালুকণা প্রভৃতি নদীর ¯্রােতের সাথে বাহিত হয়ে এ পর্যায়ে এসে নদীগর্ভে ও নদীর উভয় পার্শ্বে জমা হয়। নদীর সঞ্চয় কার্যের ফলে বিভিন্ন ভ‚মিরূপের সৃষ্টি হয়। যেমন : পলল কেন ও পলল পাখা, পাদদেশীয় পলল সমভ‚মি, প্লাবন সমভ‚মি ইত্যাদি। 
প্রশ্ন \ ১১ \ নদী কীভাবে সমুদ্রে গিয়ে পড়ে? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : যখন নদী সমভ‚মিতে আসে তখন নদী ক্ষয় এবং সঞ্চয় দুটোই করে। নদীর চলার পথে যেখানে নরম শিলা পায় নদী ঠিক সেদিক দিয়ে অগ্রসর হয়। এভাবে নদী ক্ষয় ও সঞ্চয় করতে করতে সমুদ্রে গিয়ে পড়ে।
প্রশ্ন \ ১২ \ বদ্বীপ কীভাবে সৃষ্টি হয়?
উত্তর : নদীর মোহনায় বদ্বীপ সৃষ্টি হয়। নদীর পানিতে পলিমাটি মিশ্রিত থাকে। এ পলিমাটি নদীর মোহনায় এসে জমতে থাকে। বছরের পর বছর এভাবে জমতে থাকা পলি আস্তে আস্তে ‘ব’ আকৃতির হতে থাকে এবং একসময় সমভ‚মির সৃষ্টি করে। এভাবে নদীর মোহনায় বদ্বীপ সমভ‚মির সৃষ্টি হয়। 
প্রশ্ন \ ১৩ \ বদ্বীপ কী? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : নদী যখন মোহনার কাছাকাছি আসে তখন তার স্রোত একেবারেই কমে যায়। এতে বালি ও কাদা তলানিরূপে সঞ্চিত হয়। নদীর স্রোত যদি কোনো সাগরে এসে পতিত হয় তাহলে ঐ সমস্ত বালি, কাদা নদীর মুখে জমে নদীমুখ প্রায় বন্ধ হয়ে যায় এবং ধীরে ধীরে  এর  স্তর  সাগরের  পানির  উচ্চতার উপরে উঠে যায়। তখন নদী বিভিন্ন শাখায় বিভক্ত হয়ে এই চরাভ‚মিকে বেষ্টন করে সাগরে পতিত হয়। ত্রিকোণাকার এই নতুন ভ‚মিকে বদ্বীপ বলে।
প্রশ্ন \ ১৪ \ পলল পাখা বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : পার্বত্য কোনো অঞ্চল থেকে হঠাৎ করে কোনো নদী যখন সমভ‚মিতে পতিত হয় তখন শিলাচ‚র্ণ, পলিমাটি প্রভৃতি পাহাড়ের পাদদেশে সমভ‚মিতে সঞ্চিত হয়ে ত্রিকোণ ও হাতপাখার ন্যায় ভ‚খণ্ডের সৃষ্টি করে। এরূপ পলল ভ‚মিকে পলল কোণ বা পলল পাখা বলে।
প্রশ্ন \ ১৫ \ ল্যাকোলিথ পর্বত কাকে বলে ?
উত্তর : পৃথিবীর অভ্যন্তরে অনেক গ্যাস ও গলিত শিলা আছে। অনেক সময় পৃথিবীর অভ্যন্তর থেকে এসব গলিত শিলা বা ম্যাগমা বিভিন্ন ফাটল পথে স্থানান্তরিত হয়ে ভ‚পৃষ্ঠে বের হয়ে আসার চেষ্টা করে। কিন্তু অনেক সময় বাধা পেয়ে এগুলো ভ‚পৃষ্ঠের উপরে না এসে ভ‚ত্বকের নিচে একস্থানে জমাট বাঁধে। ঊর্ধ্বমুখী চাপের কারণে স্ফীত হয়ে ভ‚ত্ব¡কের অংশবিশেষ গম্বুজ আকার ধারণ করে। এভাবে সৃষ্ট পর্বতকে ল্যাকোলিথ পর্বত বলে।
প্রশ্ন \ ১৬ \ সমভ‚মি বলতে কী বোঝ?
উত্তর : সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে অল্প উঁচু মৃদু ঢাল বিশিষ্ট সুবিস্তৃত ভ‚মিকে সমভ‚মি বলে। সমভ‚মি অঞ্চল মোটামুটি সমতল; এর বিভিন্ন স্থানে উচ্চতার সামান্য পরিবর্তন দেখা যায়। অর্থাৎ সমভ‚মি বলতে কম বন্ধুরতা সম্পন্ন ভ‚মিকে বোঝানো হয়। বিভিন্ন ভ‚প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া যেমন : নদী, হিমবাহ ও বায়ুর ক্ষয় ও সঞ্চয় ক্রিয়ার ফলে সমভ‚মির সৃষ্টি হয়।
প্রশ্ন \ ১৭ \ স্তূপ পর্বত সৃষ্টির কারণ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : ভ‚আলোড়নের সময় ভ‚পৃষ্ঠের শিলাস্তরে প্রসারণ এবং সংকোচনের সৃষ্টি হয়। এই প্রসারণ এবং সংকোচনের জন্য ভ‚ত্বকে ফাটলের সৃষ্টি হয়। কালক্রমে এ ফাটল বরাবর ভ‚ত্বক ক্রমে স্থানচ্যুত হয়। একে চ্যুতি বলে। ভ‚ত্বকের এ স্থানচ্যুতি কোথাও উপরের দিকে হয়, আবার কোথাও নিচের দিকে হয়। চ্যুতির ফলে উঁচু হওয়া অংশকে স্তূপ পর্বত বলে।
প্রশ্ন \ ১৮ \ সমভ‚মিতে ঘনবসতি গড়ে উঠেছে কেন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে অল্প উঁচু মৃদু ঢালবিশিষ্ট সুবিস্তৃত ভ‚মিকে সমভ‚মি বলে। বিভিন্ন ভ‚প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া যেমন- নদী, হিমবাহ ও বায়ুর ক্ষয় ও সঞ্চয় ক্রিয়ার ফলে সমভ‚মির সৃষ্টি হয়। মৃদু ঢালু ও স্বল্প বন্ধুরতার জন্য সমভ‚মি কৃষিকাজ, বসবাস, রাস্তাঘাট নির্মাণের জন্য খুবই উপযোগী। তাই সমভ‚মিতে সবচেয়ে ঘন জনবসতি গড়ে উঠেছে।


Comments

Translate