ইতিহাস সাজেশন
১ম অধ্যায়
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন \ ১ \ ‘ইতিহাস’ শব্দটির উৎপত্তি কোন শব্দ থেকে?
উত্তর : ‘ইতিহাস’ শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে ‘ইতিহ’ শব্দ থেকে যার অর্থ হচ্ছে ঐতিহ্য।
প্রশ্ন \ ২ \ ‘ইতিহাস’ শব্দটির সন্ধিবিচ্ছেদ কী হবে?
উত্তর : ‘ইতিহাস’ শব্দটির সন্ধিবিচ্ছেদ করলে দাঁড়ায় ইতিহ + আস। যার অর্থ এমনই ছিল।
প্রশ্ন \ ৩ \ ‘ঘটে যাওয়া ঘটনাকেই ইতিহাস বলে’ উক্তিটি কার?
উত্তর : ঘটে যাওয়া ঘটনাকেই ইতিহাস বলে উক্তিটি হচ্ছে ঐতিহাসিক ড. জনসনের।
প্রশ্ন \ ৪ \ আধুনিক ইতিহাসের জনক কে?
উত্তর : আধুনিক ইতিহাসের জনক জার্মান ঐতিহাসিক লিওপোল্ড ফন র্যাংকে।
প্রশ্ন \ ৫ \ ইতিহাস কত প্রকার?
উত্তর : ইতিহাস দুই প্রকার।
প্রশ্ন \ ৬ \ ভৌগোলিক অবস্থানগত ইতিহাস কত প্রকার?
উত্তর : ভৌগোলিক অবস্থানগত ইতিহাস তিন প্রকার।
প্রশ্ন \ ৭ \ বিষয়বস্তুগত ইতিহাস কত প্রকার?
উত্তর : বিষয়বস্তুগত ইতিহাস পাঁচ প্রকার।
প্রশ্ন \ ৮ \ ইবনে বতুতা কোন দেশের পরিব্রাজক ছিলেন?
উত্তর : ইবনে বতুতা আফ্রিকার দেশ মরক্কোর পরিব্রাজক ছিলেন।
প্রশ্ন \ ৯ \ বেদ কী?
উত্তর : বেদ ইতিহাসের একটি লিখিত গ্রন্থ।
প্রশ্ন \ ১০ \ ‘সমাজের জীবনই ইতিহাস’- উক্তিটি কার?
উত্তর : ‘সমাজের জীবনই ইতিহাস’- উক্তিটি হচ্ছে টয়েনবির।
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন \ ১ \ ‘ইতিহাস মানুষের জ্ঞান ও আত্মমর্যাদা বৃদ্ধি করে’- আলোচনা কর।
উত্তর : অতীতের সত্যনিষ্ঠ বর্ণনা মানুষের জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। আর এ বিবরণ যদি হয় নিজ দেশ, জাতির সফল সংগ্রাম, গৌরবময় ঐতিহ্যের তাহলে তা মানুষকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করে। একই সঙ্গে আত্মপ্রত্যয়ী, আত্মবিশ্বাসী হতে সাহায্য করে। সেক্ষেত্রে জাতীয়তাবোধ, জাতীয় সংহতি সুদৃঢ়করণে ইতিহাস পাঠের বিকল্প নেই।
প্রশ্ন \ ২ \ ইতিহাসের লিখিত উপাদান গুরুত্বপূর্ণ কেন?
উত্তর : ইতিহাসের লিখিত উপাদানের মধ্যে সাহিত্য, নথিপত্র, জীবনী, দলিলপত্র, চিঠিপত্র প্রভৃতি অন্তর্ভুক্ত। এসব উপাদানের মাধ্যমে মানুষ ও অতীত সমাজের ইতিহাস জানা সম্ভব। প্রতœতাত্তি¡ক উপাদান মানবজীবনের অতীত সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য দিতে পারে না। অতীত ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরতে লিখিত উপাদানের ওপর নির্ভর করতে হয়। তাই ইতিহাস রচনায় লিখিত উপাদান এত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রশ্ন \ ৩ \ ইতিহাস বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : ইতিহাস বলতে মানবসভ্যতার বিবর্তনের ধারাবাহিক বিবরণকে বোঝায়। ইতিহাস হচ্ছে অতীতের ঘটে যাওয়া ঘটনাবলির অনুসন্ধান ও বিবরণ। প্রকৃতপক্ষে কী ঘটেছিল কেবল তাই নয়, এর সাথে কী ঘটেনি এ দুয়ে মিলেই হয় ইতিহাস।
প্রশ্ন \ ৪ \ ইতিহাস পাঠের প্রয়োজনীয়তা লেখ।
উত্তর : মানবসমাজের সভ্যতার বিবর্তনের সত্যনির্ভর বিবরণ হচ্ছে ইতিহাস। যে কারণে জ্ঞানচর্চার শাখা হিসেবে ইতিহাসের গুরুত্ব অসীম। ইতিহাস পাঠ মানুষকে অতীতের পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমান অবস্থা বুঝতে, ভবিষ্যৎ অনুধাবন করতে সাহায্য করে। ইতিহাস পাঠের ফলে মানুষের পক্ষে নিজ ও নিজ দেশ সম্পর্কে মঙ্গল-অমঙ্গলের পূর্বাভাস পাওয়া সম্ভব। সুতরাং, দেশ ও জাতির স্বার্থে এবং ব্যক্তি প্রয়োজনে ইতিহাস পাঠ অত্যন্ত জরুরি।
প্রশ্ন \ ৫ \ ইতিহাসের তিনটি বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আলোচনা কর।
উত্তর : ইতিহাসের তিনটি বৈশিষ্ট্য নিচে দেওয়া হলো :
১. ইতিহাস অতীতমুখী। অতীতের ঘটনাপ্রবাহই এ বিষয়ের বিচরণক্ষেত্র। সত্যনিষ্ঠ তথ্যের সাহায্যে অতীতকে পুনর্গঠন করাই ইতিহাসের বৈশিষ্ট্য।
২. ইতিহাস থেমে থাকে না, নিরন্তর প্রবহমান। যে কারণে কাল বিভাজনে কোনো সাল-তারিখ ব্যবহার করা কঠিন। আবার পরিবর্তনের ধারা সব দেশে এক সঙ্গে ঘটেনি।
৩. বস্তুনিষ্ঠতা ও নিরপেক্ষতা ইতিহাসের বৈশিষ্ট্য। তবে প্রতিটি মানুষের পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা, দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন ভিন্ন। যে কারণে একই ইতিহাসের বর্ণনা ব্যাখ্যা এক এক ঐতিহাসিক এক এক রকমভাবে দিয়ে থাকেন। ঘটনার নিরপেক্ষ বর্ণনা উপস্থাপনা না হলে সেটা সঠিক ইতিহাস হয় না।
প্রশ্ন \ ৬ \ ইতিহাসের বিষয়বস্তুগত দিক বর্ণনা কর।
উত্তর : কোনো বিশেষ বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে যে ইতিহাস রচিত হয় তাকে বিষয়বস্তুগত ইতিহাস বলা হয়। ইতিহাসের বিষয়বস্তুর পরিসর ব্যাপক। তবু সাধারণভাবে একে পাঁচ ভাগে ভাগ করা যায়, যথা : রাজনৈতিক ইতিহাস, সামাজিক ইতিহাস, অর্থনৈতিক ইতিহাস, সাংস্কৃতিক ইতিহাস, ক‚টনৈতিক ও সা¤প্রতিক ইতিহাস।
প্রশ্ন \ ৭ \ ইতিহাস সম্পর্কে লিওপোল্ড ফন র্যাংকে কী বলেছেন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : আধুনিক ইতিহাসের জনক জার্মান ঐতিহাসিক লিওপোল্ড ফন র্যাংকে মনে করেন, প্রকৃতপক্ষে যা ঘটেছিল তার অনুসন্ধান ও তার সত্য বিবরণই ইতিহাস। তাঁর মতে- ইতিহাস মানেই হলো নগ্নসত্য। সুতরাং বলা যায়, ইতিহাস হচ্ছে মানবসভ্যতার বিবর্তনের সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের ধারাবাহিক ও সত্যনিষ্ঠ বিবরণ। সুতরাং, সঠিক ইতিহাস সবসময় সত্যকে নির্ভর করে রচিত।
প্রশ্ন \ ৮ \ ইতিহাসের সাথে হেরোডোটাস ওতপ্রোতভাবে জড়িত- ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : হিস্টরিয়া শব্দটির প্রথম ব্যবহার করেন গ্রিক ঐতিহাসিক হেরোডোটাস। তিনিই সর্বপ্রথম তার গবেষণাকর্মের নামকরণে এ শব্দটি ব্যবহার করেন যার আভিধানিক অর্থ হলো সত্যানুসন্ধান বা গবেষণা। হেরোডোটাসই প্রথম ইতিহাস এবং অনুসন্ধান এ দুটি ধারণাকে সংযুক্ত করেন। তাই ইতিহাসের সাথে হেরোডোটাস ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
প্রশ্ন \ ৯ \ ইতিহাসের প্রত্যতাত্তিক উপাদান বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : যেসব বস্তু বা উপাদান থেকে আমরা বিশেষ সময়, স্থান বা ব্যক্তি সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের ঐতিহাসিক তথ্য পাই সে বস্তু বা উপাদানই প্রত্যতাত্তিক নিদর্শন। প্রত্যতাত্তিক নিদর্শনসমূহ মূলত অলিখিত উপাদানভুক্ত। যেমন : মুদ্রা, শিলালিপি, স্তম্ভলিপি, তাম্রলিপি, ইমারত ইত্যাদি।
২য় অধ্যায়
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন \ ১ \ আদিম যুগের মানুষ কোনটি জানত না?
উত্তর : আদিম যুগের মানুষ কৃষি কাজ জানত না।
প্রশ্ন \ ২ \ মিশরের অবস্থান কতটি মহাদেশে পড়েছে?
উত্তর : মিশরের অবস্থান ৩টি মহাদেশে পড়েছে।
প্রশ্ন \ ৩ \ মিশরের পূর্বে কোন রাষ্ট্রটি অবস্থিত?
উত্তর : মিশরের পূর্বে ইসরায়েল রাষ্ট্রটি অবস্থিত।
প্রশ্ন \ ৪ \ প্রাচীন মিশরে সূর্য দেবতার নাম কী ছিল?
উত্তর : প্রাচীন মিশরে সূর্য দেবতার নাম ছিল আমনরে।
প্রশ্ন \ ৫ \ মিশরীয় সভ্যতার অন্যতম প্রধান আবিষ্কার কী ছিল?
উত্তর : হায়ারেগিফিক লিপি আবিষ্কার ছিল মিশরীয় সভ্যতার অন্যতম প্রধান আবিষ্কার।
প্রশ্ন \ ৬ \ ইতিহাসের জনক কে?
উত্তর : ইতিহাসের জনক হচ্ছেন হেরোডোটাস।
প্রশ্ন \ ৭ \ বৈজ্ঞানিক ইতিহাসের জনক কে?
উত্তর : বৈজ্ঞানিক ইতিহাসের জনক হলেন থুকিডাইডেস।
প্রশ্ন \ ৮ \ কারা ৩৬৫ দিনে বছর গণনার আবিষ্কারক?
উত্তর : মিশরীয়রা ৩৬৫ দিনে বছর গণনার আবিষ্কারক।
প্রশ্ন \ ৯ \ প্রথম পর্যায়ে লিপি ছিল কেমন?
উত্তর : প্রথম পর্যায়ে লিপি ছিল চিত্রভিত্তিক।
প্রশ্ন \ ১০ \ সিন্ধু সভ্যতার অধিবাসীরা কী পরিমাপ পদ্ধতির উদ্ভাবক ছিল?
উত্তর : সিন্ধু সভ্যতার অধিবাসীরা দ্রব্যের ওজন পরিমাপ পদ্ধতির উদ্ভাবক ছিল।
প্রশ্ন \ ১১ \ সিন্ধু সভ্যতায় কতটি সিল আবিষ্কৃত হয়েছে?
উত্তর : সিন্ধু সভ্যতায় বিভিন্ন ধরনের প্রায় ২৫০০ সিল আবিষ্কৃত হয়েছে।
প্রশ্ন \ ১২ \ মিনিয়ন সভ্যতার স্থায়িত্বকাল কত?
উত্তর : মিনিয়ন সভ্যতার স্থায়িত্বকাল ছিল খ্রিষ্টপূর্ব ৩০০০ থেকে খ্রিষ্টপূর্ব ১৪০০ অব্দ পর্যন্ত।
প্রশ্ন \ ১৩ \ হেলেনেস্টিক সংস্কৃতির জন্ম কোথায় হয়?
উত্তর : হেলেনেস্টিক সংস্কৃতির জন্ম হয় মিশরের আলেকজান্দ্রিয়ায়।
প্রশ্ন \ ১৪ \ স্পার্টা নগরীর অবস্থান কোথায়?
উত্তর : স্পার্টা নগরীর অবস্থান ছিল দক্ষিণ গ্রিসের পেলোপনেসাস নামক অঞ্চলে।
প্রশ্ন \ ১৫ \ প্রাচীন পৃথিবীতে প্রথম গণতন্ত্রের সূচনা হয় কোথায়?
উত্তর : প্রাচীন পৃথিবীতে প্রথম গণতন্ত্রের সূচনা হয় এথেন্সে।
প্রশ্ন \ ১৬ \ গ্রিক সভ্যতার স্বর্ণযুগ বলা হয়ে থাকে কার সময়কালকে?
উত্তর : গ্রিক সভ্যতার স্বর্ণযুগ বলা হয়ে থাকে পেরিক্লিসের সময়কালকে।
প্রশ্ন \ ১৭ \ গ্রিসের চ‚ড়ান্ত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয় কার সময়ে?
উত্তর : গ্রিসের চ‚ড়ান্ত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয় পেরিক্লিসের সময়ে।
প্রশ্ন \ ১৮ \ পেরিক্লিস কত বছর রাজত্ব করেন?
উত্তর : পেরিক্লিস ৩০ বছর রাজত্ব করেন।
প্রশ্ন \ ১৯ \ এথেন্সের মিত্র রাষ্ট্র নিয়ে গঠিত জোটের নাম কী ছিল?
উত্তর : এথেন্সের মিত্র রাষ্ট্র নিয়ে গঠিত জোটের নাম ছিল ‘ডেলিয়ান লীগ’।
প্রশ্ন \ ২০ \ এথেন্স স্পার্টানদের অধীনে চলে যায় কত খ্রিষ্টাব্দে?
উত্তর : এথেন্স স্পার্টানদের অধীনে চলে যায় খ্রিষ্টপূর্ব ৩৬৯ অব্দে।
প্রশ্ন \ ২১ \ গ্রিস সভ্যতায় কাদের সন্তানদের স্কুলে যাওয়া নিষিদ্ধ ছিল?
উত্তর : গ্রিস সভ্যতায় দাসদের সন্তানদের স্কুলে যাওয়া নিষিদ্ধ ছিল।
প্রশ্ন \ ২২ \ ‘ইলেকট্রা’ নাটকটির রচয়িতা কে?
উত্তর : ‘ইলেকট্রা’ নাটকটির রচয়িতা ‘সোফোক্লিস’।
প্রশ্ন \ ২৩ \ বিজ্ঞানসম্মত ইতিহাসের জনক কে ছিলেন?
উত্তর : বিজ্ঞানসম্মত ইতিহাসের জনক ছিলেন ‘থুকিডাইডেস’।
প্রশ্ন \ ২৪ \ ইতিহাসের জনক হেরোডোটাস কোন দেশের নাগরিক?
উত্তর : ইতিহাসের জনক হেরোডোটাস গ্রিক দেশের নাগরিক?
প্রশ্ন \ ২৫ \ গ্রিকদের কতটি দেব-দেবী ছিল?
উত্তর : গ্রিকদের বারটি দেব-দেবী ছিল।
প্রশ্ন \ ২৬ \ গ্রিক দেবতাদের রাজার নাম কী?
উত্তর : গ্রিক দেবতাদের রাজার নাম জিউস।
প্রশ্ন \ ২৭ \ ‘দ্য পেলোপনেসিয়ান ওয়র’ বইটির লেখক কে?
উত্তর : ‘দ্য পেলোপনেসিয়ান ওয়র’ বইটির লেখক হলেন থুকিডাইডেস।
প্রশ্ন \ ২৮ \ বিয়োগান্তক নাটকের জনক বলা হয় কাকে?
উত্তর : বিয়োগান্তক নাটকের জনক বলা হয় এসকাইলাসকে।
প্রশ্ন \ ২৯ \ গ্রিকদের সাগর দেবতার নাম কী?
উত্তর : গ্রিকদের সাগর দেবতার নাম পোসিডন।
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন \ ১ \ মিশরের ভৌগোলিক অবস্থান সম্পর্কে লেখ।
উত্তর : তিনটি মহাদেশ দ্বারা ঘিরে থাকা মিশরের ভৌগোলিক অবস্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশটি এশিয়া, আফ্রিকা ও ইউরোপ মহাদেশ দ্বারা পরিবেষ্টিত ভ‚মধ্যসাগরের উপক‚লে অবস্থিত। এর উত্তরে ভ‚মধ্যসাগর, পূর্বে লোহিত সাগর, পশ্চিমে সাহারা মরুভ‚মি, দক্ষিণে সুদান ও অন্যান্য আফ্রিকার দেশ। এর মোট আয়তন প্রায় চার লক্ষ বর্গমাইল।
প্রশ্ন \ ২ \ নীলনদের উৎপত্তি কোথা থেকে? আলোচনা কর।
উত্তর : মিশরের নীলনদের উৎপত্তি আফ্রিকার লেক ভিক্টোরিয়া থেকে। সেখান থেকে নদটি নানা দেশ হয়ে মিশরের মধ্য দিয়ে ভ‚মধ্যসাগরে এসে পড়েছে।
প্রশ্ন \ ৩ \ সিন্ধু সভ্যতার ধর্মীয় অবস্থা সম্পর্কে আলোচনা কর।
উত্তর : সিন্ধু সভ্যতায় কোনো মন্দির বা মঠের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হয়, তারা এ ধরনের দেবীমূর্তির পূজা করত। সিন্ধুবাসীদের মধ্যে মাতৃপূজা খুব জনপ্রিয় ছিল। তাছাড়া তারা দেব-দেবী মনে করে বৃক্ষ, পাথর, সাপ এবং পশুপাখির উপাসনাও করত। সিন্ধুবাসীরা পরলোকে বিশ্বাস করত। যে কারণে মৃতের কবরে তার ব্যবহার করা জিনিসপত্র ও অলংকার রেখে দিত।
প্রশ্ন \ ৪ \ সিন্ধু সভ্যতার নগর পরিকল্পনা কেমন ছিল? বর্ণনা কর।
উত্তর : সিন্ধু সভ্যতার শহরগুলোর বাড়িঘরের নকশা থেকে সহজেই বোঝা যায় যে এ সভ্যতার অধিবাসীরা উন্নত ধরনের নাগরিক সভ্যতায়
অভ্যস্ত ছিল। হরপ্পা ও মহোঞ্জাদারোর নগর পরিকল্পনা একই রকম ছিল। নগরীর ভেতর দিয়ে চলে গেছে পাকা রাস্তা। রাস্তাগুলো ছিল সোজা। প্রত্যেকটি বাড়িতে খোলা জায়গা, ক‚প ও স্নানাগার ছিল। জল নিষ্কাশনের জন্য ছোট ছোট নর্দমা সংযুক্ত করা হতো মূল নর্দমা বা পয়ঃপ্রণালির সাথে। রাস্তাঘাট পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা হতো। পথের ধারে ছিল সারিবদ্ধ ল্যাম্পপোস্ট।
প্রশ্ন \ ৫ \ গ্রিক সংস্কৃতিতে এথেন্সের অবদান মূল্যায়ন কর।
উত্তর : ভৌগোলিক কারণে গ্রিক নগর রাষ্ট্রগুলো একে অপরের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকলেও তাদের সংস্কৃতি ছিল অভিন্ন। রাজনৈতিক অনৈক্য থাকা সত্তে¡ও তারা একই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের উত্তরাধিকারী বলে মনে করত। তাদের ভাষা, ধর্ম, সাহিত্য, খেলাধুলা সবকিছু তাদের এক সংস্কৃতির বন্ধনে করে রেখেছিল। এই সংস্কৃতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে মূল অবদান ছিল এথেন্সের। আর এই সংস্কৃতির নাম হচ্ছে হেলেনীয় সংস্কৃতি।
প্রশ্ন \ ৬ \ গ্রিকদের ধর্ম সম্পর্কে যা জান লেখ?
উত্তর : গ্রিকদের বারটি দেব-দেবী ছিল। বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তি পূজা ছাড়াও তারা বীর যোদ্ধাদের পূজা করত। জিউস ছিল দেবতাদের রাজা। অ্যাপোলো ছিলেন সূর্য দেবতা, পোসিডন ছিলেন সাগরের দেবতা। এথেনা ছিলেন জ্ঞানের দেবী। বারজনের মধ্যে এই চারজন ছিলেন শ্রেষ্ঠ। রাষ্ট্রের নির্দেশে পুরোহিতরা ধর্মীয় দায়িত্ব পালন করতেন। ডেলোস দ্বীপে অবস্থিত লেফির মন্দিরে বিভিন্ন নগর রাষ্ট্রের মানুষ সমবেত হয়ে এক সঙ্গে অ্যাপোলো দেবতার পূজা করত।
প্রশ্ন \ ৭ \ বিজ্ঞানে গ্রিকের কী অবদান আছে ব্যাখ্যা কর?
উত্তর : গ্রিকরা প্রথম বিজ্ঞানচর্চার সূত্রপাত করে খ্রিষ্টপূর্ব ৬০০ অব্দে। পৃথিবীর মানচিত্র প্রথম অঙ্কন করেন গ্রিক বিজ্ঞানীরা। তারাই প্রথম প্রমাণ করেন যে, পৃথিবী একটি গ্রহ এবং তা নিজ কক্ষপথে আবর্তিত হয়। গ্রিক জ্যোতির্বিদরা সূর্য ও চন্দ্রগ্রহণের কারণ নির্ণয় করতে সক্ষম হন। চাঁদের নিজস্ব কোনো আলো নেই। বজ্র ও বিদ্যুৎ জিউসের ক্রোধের কারণ নয়, প্রাকৃতিক কারণে ঘটে। এই সত্য তারাই প্রথম আবিষ্কার করেন। জ্যামিতির পণ্ডিত ইউক্লিড পদার্থবিদ্যায় পারদর্শী ছিলেন। বিখ্যাত গণিতবিদ পিথাগোরাস, চিকিৎসা বিজ্ঞানী হিপোক্রেটসের যথেষ্ট খ্যাতি ছিল।
প্রশ্ন \ ৮ \ সভ্যতায় রোমানদের অবদান মূল্যায়ন কর।
উত্তর : রোম শিল্প, সাহিত্য, দর্শন, স্থাপত্য সর্বক্ষেত্রে গ্রিকদের দ্বারা প্রভাবিত ছিল। তারা এসব বিষয়ে গ্রিকদের অনুসরণ ও অনুকরণ করেছে। তবে সামরিক সংগঠন, শাসন পরিচালনা, আইন ও প্রকৌশল বিদ্যায় তারা গ্রিক ও অন্যান্য জাতির ওপর শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিল। এক্ষেত্রে আধুনিক বিশ্ব রোমানদের কাছে বিপুলভাবে ঋণী।
৪র্থ অধ্যায়
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন \ ১ \ পাল বংশের প্রতিষ্ঠাতা কে ছিলেন?
উত্তর : পাল বংশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন গোপাল।
প্রশ্ন \ ২ \ গৌড়রাজ কাকে বলা হতো?
উত্তর : শশাংককে গৌড়রাজ বলা হতো।
প্রশ্ন \ ৩ \ শশাংকের রাজধানী কোথায় ছিল?
উত্তর : শশাংকের রাজধানী ছিল কর্ণসুবর্ণে।
প্রশ্ন \ ৪ \ সমতট অঞ্চলে হিউয়েন সাং কত শতকে ভ্রমণ করেন?
উত্তর : সমতট অঞ্চলে হিউয়েন সাং সাত শতকে ভ্রমণ করেন।
প্রশ্ন \ ৫ \ কত খ্রিষ্টপূর্বাব্দে গ্রিক বীর আলেকজান্ডার ভারত আক্রমণ করেন?
উত্তর : ৩২৭ খ্র্রিষ্টপূর্বাব্দে গ্রিক বীর আলেকজান্ডার ভারত আক্রমণ করেন।
প্রশ্ন \ ৬ \ মৌর্য বংশের প্রতিষ্ঠাতার নাম কী?
উত্তর : মৌর্য বংশের প্রতিষ্ঠাতার নাম চন্দ্রগুপ্ত।
প্রশ্ন \ ৭ \ কত খ্রিষ্টাব্দে ভারতে মৌর্য বংশের প্রতিষ্ঠা হয়?
উত্তর : ৩২১ খ্রিষ্টাব্দে ভারতে মৌর্য বংশের প্রতিষ্ঠা হয়।
প্রশ্ন \ ৮ \ শশাংক কার মহাসামন্ত ছিলেন?
উত্তর : শশাংক গুপ্ত রাজা মহাসেন গুপ্তের মহাসামন্ত ছিলেন।
প্রশ্ন \ ৯ \ মাৎস্যন্যায় কী?
উত্তর : অরাজকতাপূর্ণ অবস্থাকে মাৎস্যন্যায় বলে।
প্রশ্ন \ ১০ \ পাল বংশের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ রাজা কে ছিলেন?
উত্তর : পাল বংশের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ রাজা ছিলেন ধর্মপাল।
প্রশ্ন \ ১১ \ কোন পাল রাজার মৃত্যুর পর পাল সাম্রাজ্যের পতন শুরু হয়?
উত্তর : দেবপালের মৃত্যুর পর পাল সাম্রাজ্যের পতন শুরু হয়।
প্রশ্ন \ ১২ \ প্রথম মহীপালের পিতার নাম কী?
উত্তর : প্রথম মহীপালের পিতার নাম দ্বিতীয় বিগ্রহপাল।
প্রশ্ন \ ১৩ \ প্রথম মহীপাল কত খ্রিষ্টাব্দে সিংহাসনে বসেন?
উত্তর : প্রথম মহীপাল ৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দে সিংহাসনে বসেন।
প্রশ্ন \ ১৪ \ পাল সাম্রাজ্যের পুনঃপ্রতিষ্ঠার কৃতিত্ব কার?
উত্তর : পাল সাম্রাজ্যের পুনঃপ্রতিষ্ঠার কৃতিত্ব প্রথম মহীপালের।
প্রশ্ন \ ১৫ \ রংপুর জেলার মাহীগঞ্জ শহরটির প্রতিষ্ঠাতা কে?
উত্তর : রংপুর জেলার মাহীগঞ্জ শহরটির প্রতিষ্ঠাতা পাল রাজা প্রথম মহীপাল।
প্রশ্ন \ ১৬ \ মহীপাল দিঘি কোথায় অবস্থিত?
উত্তর : মহীপাল দিঘি দিনাজপুরে অবস্থিত।
প্রশ্ন \ ১৭ \ মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি খনন করেন কে?
উত্তর : মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি খনন করেন প্রথম মহীপাল।
প্রশ্ন \ ১৮ \ ‘কৈবর্ত বিদ্রোহ’ কোন অঞ্চলে সংঘটিত হয়েছিল?
উত্তর : ‘কৈবর্ত বিদ্রোহ’ বরেন্দ্র অঞ্চলে সংঘটিত হয়েছিল।
প্রশ্ন \ ১৯ \ দ্বিতীয় মহীপালকে হত্যা করেন কে?
উত্তর : দ্বিতীয় মহীপালকে হত্যা করেন দিব্যেক বা দিব্য।
প্রশ্ন \ ২০ \ কোন গ্রন্থ হতে রামপালের জীবনী জানা যায়?
উত্তর : ‘রামচরিত’ নামক গ্রন্থ হতে রামপালের জীবনী জানা যায়।
প্রশ্ন \ ২১ \ রামপাল কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত রাজধানীর নাম কী ছিল?
উত্তর : রামপাল কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত রাজধানীর নাম ছিল ‘রামাবতি’।
প্রশ্ন \ ২২ \ রামপালের পর পাল বংশের শাসক কে হন?
উত্তর : রামপালের পর পাল বংশের শাসক হন কুমার পাল।
প্রশ্ন \ ২৩ \ ধর্মপাল কত বছর রাজত্ব করেন?
উত্তর : ধর্মপাল প্রায় ৪০ বছর রাজত্ব করেন।
প্রশ্ন \ ২৪ \ খড়গদের রাজধানীর নাম কী?
উত্তর : খড়গদের রাজধানীর নাম কর্মান্ত বাসক।
প্রশ্ন \ ২৫ \ দেব রাজাদের রাজধানী কোথায় ছিল?
উত্তর : দেব রাজাদের রাজধানী ছিল দেবপর্বতে।
প্রশ্ন \ ২৬ \ লালমাই পাহাড় কোথায় অবস্থিত?
উত্তর : লালমাই পাহাড় কুমিলায় অবস্থিত।
প্রশ্ন \ ২৭ \ প্রাচীনকালে লালমাই পাহাড় কী নামে পরিচিত ছিল?
উত্তর : প্রাচীনকালে লালমাই পাহাড় রোহিতগিরি নামে পরিচিত ছিল।
প্রশ্ন \ ২৮ \ বিজয় সেনের পুত্রের নাম কী ছিল?
উত্তর : বিজয় সেনের পুত্রের নাম ছিল বলাল সেন।
প্রশ্ন \ ২৯ \ প্রাচীন বাংলার রাজারা কেন উপাধি ধারণ করতেন?
উত্তর : প্রাচীন বাংলার রাজারা নিজেদের শক্তিধর মনে করে উপাধি ধারণ করতেন।
প্রশ্ন \ ৩০ \ বৌদ্ধধর্ম বিকাশে দেবপালের ভ‚মিকা নিরূপণ কর।
উত্তর : দেবপাল বৌদ্ধধর্মের একজন বড় পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। মগধের বৌদ্ধ মঠগুলোর তিনিই সংস্কার সাধন করেন। তিনি নালন্দায় কয়েকটি মঠ এবং বুদ্ধগয়ায় এক বিরাট মন্দির নির্মাণ করেন। এগুলো বৌদ্ধধর্ম বিকাশে ভ‚মিকা রাখে।
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন \ ১ \ তাম্রশাসন বলতে কী বোঝ?
উত্তর : প্রাচীনকালের রাজারা তামার পাতে খোদাই করে বিভিন্ন ঘোষণা বা নির্দেশ দিতেন। এগুলোই তাম্রশাসন। স্বাধীন বঙ্গরাজ্য আমলের এ রকম সাতটি তাম্রশাসন পাওয়া গেছে।
প্রশ্ন \ ২ \ কান্তিদেবের রাজ্য সম্পর্কে কী জান?
উত্তর : দক্ষিণ-পূর্ব বাংলার হরিকেল জনপদে নবম শতকে একটি স্বাধীন রাজ্যের উদ্ভব ঘটে। এ রাজ্যের রাজা ছিলেন কান্তিদেব। দেব রাজবংশের সঙ্গে কান্তিদেবের কোনো সম্পর্ক ছিল কি-না তা জানা যায় না। তার পিতা ছিলেন ধনদত্ত ও পিতামহ ভদ্রদত্ত। বর্তমান সিলেট কান্তিদেবের রাজ্যভুক্ত ছিল। তার রাজধানীর নাম ছিল বর্ধমানপুর। বর্তমানে এ নামে কোনো অঞ্চলের অস্তিত্ব নেই। এ সময়ে দক্ষিণ-পূর্ব বাংলায় চন্দ্রবংশ বলে পরিচিত নতুন এক শক্তির উদয় হয়। কান্তিদেবের গড়া রাজ্যের পতন হয় এ চন্দ্রবংশের হাতে।
প্রশ্ন \ ৩ \ খড়গ বংশ সম্পর্কে আলোচনা কর।
উত্তর : সপ্তম শতকের দ্বিতীয়ার্ধে মগধ ও গৌড়ে পরবর্তী গুপ্তবংশীয় রাজাগণ প্রভুত্ব স্থাপন করেন। এ সময় খড়গ বংশের রাজারা দক্ষিণ-পূর্ব বাংলায় একটি স্বাধীন রাজ্যের সৃষ্টি করেন। তাদের রাজধানীর নাম ছিল কর্মান্ত বাসক। কুমিলা জেলার বড় কামতার প্রাচীন নামই সম্ভবত এ কর্মান্ত বাসক। খড়গদের অধিকার ত্রিপুরা ও নোয়াখালী অঞ্চলের ওপর বিস্তৃত ছিল।
প্রশ্ন \ ৪ \ ত্রি-শক্তির সংঘর্ষ বলতে কী বোঝ?
উত্তর : ধর্মপালের সময়ে বাংলায় তিনটি রাজবংশ উত্তর ভারতের আধিপত্য বিস্তার করতে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়। এ তিনটি রাজবংশ হলো- পাল বংশ, রাজপুতনার গুর্জরপ্রতিহার বংশ ও দাক্ষিণাত্যের রাষ্ট্রক‚ট বংশ। ইতিহাসে এ তিনটি বংশের মধ্যে সংঘটিত যুদ্ধকে ত্রি-শক্তির সংঘর্ষ বলা হয়।
প্রশ্ন \ ৫ \ মহিপাল কী কী জনকল্যাণমূলক কাজ করেছিলেন তা বর্ণনা কর।
উত্তর : মহিপাল বাংলার অনেক দিঘি ও নগরী প্রতিষ্ঠা করেন। নগরীগুলো হলো রংপুর জেলার মাহীগঞ্জ, বগুড়া জেলার মহীপুর, দিনাজপুরের মাহীসন্তোষ ও মুর্শিদাবাদের মহীপাল নগরী। আর দিঘিগুলো হলো দিনাজপুরের মহীপাল দিঘি ও মুর্শিদাবাদের মহীপালের সাগর দিঘি।
প্রশ্ন \ ৬ \ প্রাচীনকালে গৌড় ছিল একটি স্বাধীন রাজ্য-ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : প্রাচীনকালে গৌড় একটি স্বাধীন রাজ্য ছিল বলে জানা যায়। যার অবস্থান ষষ্ঠ শতকে পূর্ব বাংলার উত্তর অংশে ছিল। সপ্তম শতকে শশাংককে গৌড়রাজ বলা হতো। বাংলায় মুসলিম বিজয়ের কিছু আগে মালদহ জেলার লক্ষণাবতীকেও গৌড় বলা হতো।
প্রশ্ন \ ৭ \ মহিপালের জনহিতকর কাজের বর্ণনা দাও।
উত্তর : মহিপাল জনকল্যাণকর কার্যে মনোযোগী ছিলেন। বাংলার অনেক দিঘি ও নগরী এখনও তার নামের সাথে জড়িত হয়ে আছে। তিনি অসংখ্য শহর প্রতিষ্ঠা ও দিঘি খনন করেন। শহরগুলো হলো রংপুর জেলার মাহীগঞ্জ, বগুড়া জেলার মহীপুর, দিনাজপুর জেলার মাহীসন্তোষ ও মুর্শিদাবাদ জেলার মহীপাল নগরী। আর দিঘিগুলোর মধ্যে দিনাজপুরের মহীপাল দিঘি ও মুর্শিদাবাদের মহীপালের সাগর দিঘি বিখ্যাত। সম্ভবত জনহিতকর কাজের মাধ্যমেই মহীপাল জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন।
প্রশ্ন \ ৮ \ মাৎস্যন্যায় বলতে কী বোঝ?
উত্তর : মাৎস্যন্যায় হলো বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি। পুকুরে বড় মাছ শক্তির দাপটে ছোট মাছকে ধরে গিলে ফেলার মতো বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিকে বলা হয় মাৎস্যন্যায়। শশাংকের মৃত্যুর পর এ অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। বাংলার সবল অধিপতিরা এমনি করে ছোট ছোট অঞ্চলগুলোকে গ্রাস করছিল। এই সময়কালটিকেই বলা হয় মাৎস্যন্যায়।
প্রশ্ন \ ৯ \ দক্ষিণ-পূর্ব বাংলায় বর্ম রাজবংশ প্রতিষ্ঠা পেয়েছিল কীভাবে?
উত্তর : কলচুরিরাজ কর্ণের সাথে বর্মরা এদেশে এসেছিল। বজ্রবর্মার মতো জাতবর্মাও প্রথমদিকে কলচুরিরাজ গাঙ্গেয়দেব ও কর্ণের সামন্তরাজ ছিলেন। কৈবর্ত বিদ্রোহের সময় তিনি শ্বশুর কলচুরিরাজ কর্ণের সহায়তা ও সমর্থনে দক্ষিণ-পূর্ব বাংলায় মুন্সীগঞ্জের বিক্রমপুরকে কেন্দ্র করে স্বাধীন বর্ম রাজবংশের প্রতিষ্ঠা করেন।
প্রশ্ন \ ১০ \ দেববংশ সম্পর্কে কী জান?
উত্তর : খড়গ বংশের শাসনের পর একই অঞ্চলে অষ্টম শতকের শুরুতে
দেববংশের উত্থান ঘটে। এ বংশের চারজন রাজার নাম পাওয়া যায়। এরা হলেন শ্রীশান্তিদেব, শ্রীবীরদেব, শ্রীআনন্দদেব ও শ্রীভবদেব। দেব রাজারা নিজেদের খুব শক্তিধর মনে করতেন। তাই তারা তাদের নামের সাথে যুক্ত করতেন বড় বড় উপাধি। যেমন : পরম সৌগত, পরমভট্টারক, পরমেশ্বর মহারাজাধিরাজ ইত্যাদি। তাদের রাজধানী ছিল দেবপর্বতে। কুমিল্লার নিকট ময়নামতির কাছে ছিল এ দেবপর্বত। দেবদের রাজত্বের বিস্তৃতি ছিল সমগ্র সমতট অঞ্চলে। আনুমানিক ৭৪০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ৮০০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত দেব রাজারা শাসন করেন।
Comments