Skip to main content
Hello everybody! সবাই কেমন আছো।

পৃথিবীতে পানি আছে কতটুকু

পৃথিবীই সৌরজগতের একমাত্র গ্রহ, যেখানে প্রাণের অস্তিত্ব আছে। শুধু অস্তিত্ব আছে, তা-ই নয়; হয়েছে মানুষের মতো বুদ্ধিমান প্রাণীর বিকাশ। বিজ্ঞানীদের মতে, পৃথিবীতে প্রাণের বিকাশের পেছনে পানির ভূমিকা অপরিসীম। মোটা দাগে, পৃথিবীর পানিকে দুভাগে ভাগ করা যায়। লবণাক্ত বা পানের অযোগ্য পানি। আর মিঠা বা সুপেয় পানি।

সুপেয় পানির মূল্য কতখানি, তা এ দেশের মানুষ বেশ ভালোই জানেন। শুধু বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নয়, পৃথিবীর বেশিরভাগ অঞ্চলেই আছে সুপেয় পানির সংকট। আবার অন্যদিকে প্রতিনিয়ত বাড়ছে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা। বন্যা বা অতিবৃষ্টির মতো দুর্যোগও বাড়ছে পৃথিবীজুড়ে।

তার মানে, একদিকে পানি যেমন জীবন বাঁচায়, তেমনি কখনো কখনো প্রাণনাশের কারণও হয়ে ওঠে। পৃথিবীতে ঠিক কী পরিমাণ পানি আছে আর তা কীভাবে কোথায় আছে, তা নিয়ে মনে প্রশ্ন জাগা তাই স্বাভাবিক।

মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (USGS) অনুসারে, পৃথিবীর মোট পানির পরিমাণ ১৩৩ দশমিক ২ কোটি ঘন কিলোমিটার। সেটা আসলে কতটুকু?

পৃথিবীকে একটি ফুটবলের মতো কল্পনা করলে এর মোট পানির পরিমাণ হবে সামান্য একটি পিংপং বলের সমান
পৃথিবীকে একটি ফুটবলের মতো কল্পনা করলে এর মোট পানির পরিমাণ হবে সামান্য একটি পিংপং বলের সমান
 কল্পনা করুন, পৃথিবীকে যদি একটি ফুটবলের মতো। তাহলে এই মোট পানির পরিমাণ হবে সামান্য একটি পিংপং বলের সমান। তবে এই পানি ছড়িয়ে আছে পৃথিবীজুড়ে। পৃথিবীর প্রায় ৭২ শতাংশ জায়গা পানিতে ডুবে আছে। আবার এই সবটা পানির ৯৭ শতাংশ আবার লবণাক্ত অথবা অন্য কোনো কারণে পানের অযোগ্য।

সমুদ্রের কারণে উপকূলের চারপাশে ২৪ হাজার কিলোমিটার জুড়ে পানির স্তর তৈরি হয়। ভূপৃষ্ঠের ২ কিলোমিটার গভীরে তৈরি হয় এই স্তর। এই পানি একত্র করে যুক্তরাষ্ট্রের মতো বড় আয়তনের দেশে রাখতে চাইলে পুরো দেশটাকে ১৪৫ কিলোমিটার গভীর হ্রদে পরিণত করতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটসের উডস হোল ওশানোগ্রাফিক ইনস্টিটিউশনের (ডব্লিউএইচওআই) সমুদ্রবিজ্ঞানী ডেভিড গ্যালোর মতে, পানির এই পরিমাণটা অনেক বেশি মনে হতে পারে, কিন্তু বাস্তবে বেশ কম। আপনি পৃথিবীকে আপেলের সমান কল্পনা করলে, এর ওপরে মোট পানির স্তরটি হতো ফলের খোসার চেয়েও পাতলা।

মিঠা পানির জন্য কথাটি আরও বেশি সত্য। ৭০ শতাংশ মিঠা পানি আটকে আছে বরফের মাঝে। পৃথিবীর মোট মিঠাপানির ৫০ শতাংশ জমা আছে ব্রাজিল, রাশিয়া, কানাডা, ইন্দোনেশিয়া, চীন ও কলম্বিয়াতে। এ ছাড়াও পৃথিবীর এক তৃতীয়াংশ জনসংখ্যা ওয়াটার-স্ট্রেসড বা পানির অভাব আছে, এমন দেশে বসবাস করে। একটি দেশে কী পরিমাণ পানি প্রতিনিয়ত গ্রহণ করা হয় এবং মোট কী পরিমাণ পানি আছে, তার অনুপাতের মাধ্যমে নির্ধারণ করা হয় বিষয়টি। পানির অভাবে থাকা এই দেশগুলোতে চাহিদার বিপরীতে মোট পানির পরিমাণ অনেকটা কম। অন্যদিকে যেসব দেশে চাহিদার তুলনায় মোট পানির পরিমাণ বেশি, সেসব দেশকে অনুপাতের ভিন্নতা অনুযায়ী পানির মাঝারি বা উচ্চ চাপের দেশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এসব দেশের মানুষ গড়ে চাহিদার তুলনায় ২০ শতাংশ পানি বেশি ব্যবহার করে। এই অতিরিক্ত পানির পুরোটাই অপচয় হয় নানা কাজে।

পৃথিবীর পানির পরিমাণ অসীম নয়। এটা সীমিত। তাই, পানির ব্যবহার পরিমিত করা সব মানুষের দায়িত্ব। আমরা যদি নিজেদের জায়গা থেকে সবাই সচেতন হই, তাহলেই কেবল পৃথিবীর পানির পরিমিত ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব। আগামী প্রজন্মের উন্নত ভবিষ্যত নিশ্চিত করতে পানির অপচয় রোধের তা-ই বিকল্প নেই।


Comments

Translate